ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
আমাদের দেশের যারা ইসলামী চিন্তা ধারায় বিশ্বাস করেন, তাদের কাছ মনে হতে পারে ব্যাংকে টাকা রাখা হারাম।
বেশির ভাগ মানুষের যে চিন্তাধারা সেটাতে তারা মনে করে এই টাকাটা বিনিয়োগ করা হচ্ছে এবং সেখান থেকে রিটার্ন পাচ্ছেন। অর্থাৎ তারা এটাকে গ্যাম্বলিং মনে করেন না। সেই অর্থটাকে তারা বৈধ হিসেবে মনে করে।
এটাতে তাদের একটা স্বস্তির জায়গা তৈরি করে। এর ফলেই প্রচলিত ব্যাংকগুলো তাদের ইসলামী উইনডো ও শাখা রাখছে ইসলামী ব্যাংকের।
বাংলাদেশে যে সকল ব্যাংক রয়েছে সব ব্যাংকের মধ্যে অন্যতম ইসলামী ব্যাংক। সময়ের সাথে সাথে মানুষের অনেক কিছুরই প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন হয়।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
দেশের বেসরকারি খাতের সর্ববৃহৎ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এখানেও নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। ঘরে বসেই ইসলামী ব্যাংকের হিসাব খোলা যায়। হিসাবে লেনদেন করা যায় বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে। এ ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করা যায় বিশ্বের যেকোনো দেশে। নগদ টাকা জমা দিতেও এখন আর যেতে হয় না ব্যাংকে।
ইসলামী ব্যাংক এর স্টুডেন্ট একাউন্ট এর পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টও রয়েছে। এছাড়াও ব্যতিক্রমধর্মী অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়। আজকের এই পোস্টে সেভিংস একাউন্ট সুবিধা সম্পর্কে জানাবো।
ইসলামিক ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট কি?
মূলত আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের অধীনে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে একাউন্টের ধরনের মধ্য থেকে একটি হলো ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট।
ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারকারীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রকমের ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরীর সুযোগ করে দিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক, তারই ধারাবাহিকতায় সেভিংস একাউন্ট।
আর কিভাবে খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংকের অধীনে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়? এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন নিম্নলিখিত আর্টিকেল এর মাধ্যমে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর মুনাফা:
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ব্যবহারকারী হিসেবে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর ক্ষেত্রে যে সমস্ত মুনাফার অংশীদার আপনি হতে পারবেন, সেগুলো নিচে মেনশন করা হলো।
আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর টাকা রাখেন তাহলে ৩.৫% হারে মুনাফা পেতে পারেন এটি মূলত প্রতি ৬ মাস পরপর দেয়া হয়।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
আর আপনাকে দেয়া এই মুনাফার উপরে সরকারি প্রায় ১৫% ভ্যাট কার্যকর হয়ে থাকে।
এসএমএস ব্যাংকিং চার্জ:
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট ব্যবহারকারী হিসেবে এসএমএস ব্যাংকিং চার্জ হিসেবে প্রতি ৬ মাস পরপর আপনার একাউন্ট থেকে কেটে নেয়া হয় ৫৭ টাকা + ৭.৫ ভ্যাট।
এই এসএমএস ব্যাংকিং চার্জ মূলত প্রত্যেকটি ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট থেকে প্রযোজ্য হয়।
অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত চার্জ:
মূলত আপনার অ্যাকাউন্টের একটিভিটির উপর ভিত্তি করেই আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত চার্জ গুলো নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তবে একাউন্ট একটিভ চলতে থাকলে প্রতি বছরে ৬ মাস পর পর চার্জ পরিশোধযোগ্য।
বছরে প্রতি ৬ মাস পরপর আপনার একাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট পরিমান চার্জ টাকা হবে এবং ভ্যাট প্রযোজ্য হবে।
সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম:
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট তৈরি করার জন্য বিভিন্ন রকমের ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে অর্থাৎ আপনার অ্যাকাউন্টের প্রকারভেদে ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে।
ব্যবসায়িক একাউন্ট খোলার জন্য যা প্রযোজ্য হবে:
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
* গ্রাহকের ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাসপোর্ট অথবা জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি।
* গ্রাহকের ২ কপি সদ্য তোলা রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
* নমিনির নির্বাচনকৃত ব্যক্তির একটি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং এক কপি রঙিন ছবি।
* আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট বা ই টিন সার্টিফিকেট প্রযোজ্য হবে।
এছাড়াও যা প্রয়োজন হবে:
* আপনার প্রতিষ্ঠান যদি ট্রাস্ট হয় তাহলে ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠান দলিল বা এটি প্রমাণ এর কাগজ।
* প্রতিষ্ঠান স্কুল-মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় হলে ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন থাকতে হবে।
* প্রতিষ্ঠান লিমিটেড কোম্পানি হলে মেমোরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস অব এসোসিয়েশন এর সত্যায়িত অনুলিপি।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
ব্যবসায়িক একাউন্ট এর প্রকারভেদ বর্ণনা করা হলো এবার আপনার প্রয়োজন বেঁধে যে সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে চান সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠান সঠিক দলিল পেশ করতে হবে।
যখন এই সমস্ত ডকুমেন্ট কালেক্ট করা সম্পন্ন হয়ে যাবে তখন আপনি ইসলামী ব্যাংক সেভিং একাউন্ট তৈরি করার যে একাউন্ট অপেনিং ফর্ম রয়েছে সেটি কালেক্ট করে নিতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে অনেক সুবিধা রয়েছেঃ
১৮ বছরের উপরে না হলে কোনো ব্যাংক একাউন্ট করা যায় না। কিন্তু আপনার বয়স যদি ১৮ থেকে কম হয় তাহলে আপনি চাইলে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন। এই সেভিংস একাউন্ট অপারেট করবে আপনার অভিভাবক। তার মানে বলা যায় ইসলামি ব্যাংক এর সেভিংস একাউন্টে এটা একটা অনেক বড় সুবিধা।
তারপর ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এর আরেকটা সুবিধা হলো ই-ব্যাঙ্কিং। ইসলামী ব্যাংকের অ্যাপস প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে অর্থাৎ ইন্টারনেট যেকোন লেনদেন করতে পারবেন।
আরেকটি সুবিধা হলো এটিএম কার্ডের। এখন আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন এটিএম কার্ডটা সকল ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করে থাকে। কিন্তু আপনি ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে যদি এটিএম কার্ড নিয়ে থাকেন তাহলে সেটার চার্জ অনেক কম হয়ে থাকে যেমন আপনাকে প্রতি ছয় মাস পরপর ৩০০ টাকা বা এক বছর ৬০০ টাকা দিতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
সেভিংস একাউন্ট এর নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে। গ্রাহক যে কোনো সময়ে যে কোনো পরিমাণ টাকা উত্তোলন করতে পারে না। বরং তার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে। যেমন একদিনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা উত্তোলন করা যায় না, মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করতে হলে ব্যাংককে আগাম নোটিশ প্রদান করতে হয়, একসাথে সব টাকা উত্তোলন করা যায় না ইত্যাদি।
ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট, এবং কারেন্ট একাউন্ট ও অনেক সুবিধা রয়েছে।
স্টুডেন্ট একাউন্ট এর সুবিধাঃ
১) সম্পূর্ণ ফ্রিতে বাংকিং করা।
২) সল্প জামানতে একাউন্ট একটিভ করা।
৩) ইন্টারনেট ব্যাংকিং
৪)মাত্র ১০০টাকা দিয়ে একাউন্ট খোলা যায়।
৫)চেক বই এর মাধ্যমে লেনদেন করা যায়,
৬) সারাদেশে প্রায় আট হাজার এটিএম এ যে কোন সময় টাকা তোলা যায়।
৭) ফ্রি এটিএম কার্ড
৮) এটিএম এর বাৎসরিক চার্জ দিতে হয়না।
৯) দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে ২৪ ঘন্টা এটিএম এর মাধ্যমে টাকা তোলার সুবিধা।
১০) দেশের যে কোন শাখায় টাকা ট্রান্সফার করা যায়,
১১) বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স এর গ্রহনের করা যায়,
১২) ফ্রিলান্সিং এর টাকা তোলা যায়,
১৩)মোবাইল রিচার্জ বা টপআপের করা যায়,
১৪) এছাড়াও ব্যাংক অনুসারে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়।
কারেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধা
ইসলামিক ব্যাংকে মূলত অনেক ধরনের একাউন্ট খোলা যায়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে কারেন্ট একাউন্ট। এই একাউন্টের সুবিধা হচ্ছে আমনে যখন খুশি যত খুশি টাকা রাখতে পারবেনএবং প্রয়োজনমতো সাথে সাথে আপনি আপনার ইচ্ছামত টাকা তুলতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
এই একাউন্ট খোলে মূলত যারা চাকরি করে বা ব্যবসা-বাণিজ্য করে।এই একাউন্টে আপনি যখন খুশি টাকা জমা দিতে পারবেন এবং যখন খুশি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
এই একাউন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি যখন তখন লেনদেন করতে পারবেন।
ইসলামি ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ এর সুবিধাঃ
ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন একটি স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ। যেকোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কার্ড ও এমক্যাশ নম্বরে সরাসরি টাকা পাঠানো যায় এই অ্যাপ থেকে। টাকা নেয়া যায় বিকাশ, নগদ ও রকেটেও। আর যেকোনো ব্যাংকের ভিসা বা মাস্টারকার্ড, ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও এমক্যাশ থেকে টাকা আনা যায় সেলফিনে।
এতে রয়েছে ভিসা সুবিধাযুক্ত একটি ভার্চুয়াল ডেবিট কার্ড। এর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি যেকোনো সাইটে ই-কমার্সের পেমেন্ট করা যায়।
সেলফিনের মাধ্যমে নিজে নিজে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস, স্টুডেন্ট, ডিপিএস জাতীয় হিসাব ও মাসিক মুনাফাভিত্তিক জমা হিসাব খোলা যায়। বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে তাৎক্ষণিক রেমিটেন্স গ্রহণ করা যায় সেলফিনে। ফ্রিল্যান্সার কর্মীরাও যেকোনো দেশ থেকে সরাসরি পেমেন্ট নিতে পারেন।
সেলফিনের মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ করা যায়, যেকোনো ব্যাংকের ভিসা/মাস্টারকার্ডের বিল দেয়া যায়; চুক্তিবদ্ধ স্কুল-কলেজের ফি প্রদান করা যায়। পরিচিত সেলফিন ব্যবহারকারীর কাছে টাকা চেয়ে রিকোয়েস্ট মানি করা যায়। তাৎক্ষণিক আর্থিক প্রয়োজন পূরণে এ যেন এক ম্যাজিক। ইসলামী ব্যাংকের এটিএম ও এজেন্ট আউটলেট থেকে ক্যাশ আউট করা যায় কার্ড ছাড়াই। যেকেউ বাংলাদেশ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে স্মার্টফোনে খুলতে পারেন সেলফিন অ্যাকাউন্ট।
ইসলামী ব্যাংকের আরেকটি জনপ্রিয় ডিজিটাল সেবা হচ্ছে আই-ব্যাংকিং বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং। এর মাধ্যমে গ্রাহক বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে নিজের অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারেন। হিসাবের ব্যালেন্স জানা, স্টেটমেন্ট গ্রহণ, বিনিয়োগ স্টেটমেন্ট ও আউটস্ট্যান্ডিং পজিশন নেয়া এবং এক্সপোর্ট/ইমপোর্ট বিলের কস্ট শিট নেয়া যায়। যেকোনো ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে দিনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত তাৎক্ষণিক ফান্ড ট্রান্সফার করা যায়। আই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ই-কমার্সের পেমেন্ট প্রদান, মোবাইল রিচার্জ, অনলাইনে ইউটিলিটি বিল প্রদান করা যায়। সহজে আই-ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য রয়েছে আই-স্মার্ট নামে মোবাইল অ্যাপ।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে ডুয়েল কারেন্সি ডেবিট কার্ড। এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোনো এটিএম থেকে টাকা বা বিদেশি মুদ্রা উত্তোলন করা যায়। দেশ-বিদেশে পিওএস মেশিনের মাধ্যমে কেনাকাটা ও ই-কমার্স ট্রানজেকশন করা যায়। এ ব্যাংকের আরেকটি অনন্য সার্ভিস হচ্ছে ক্যাশ-বাই-কোড যার মাধ্যমে প্রাপকের ব্যাংক হিসাব ছাড়াই উত্তোলনযোগ্য নগদ টাকা পাঠানো যায়। আই-ব্যাংকিং, সেলফিন বা এটিএম মেশিন থেকে ক্যাশ-বাই-কোড ইস্যু করা যায়।
ইসলামী ব্যাংকের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস হচ্ছে এমক্যাশ। মোবাইল রিচার্জ, ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লেনদেন, পারসন টু পারসন এবং পারসন টু গভর্নমেন্ট ফান্ড ট্রান্সফার, করপোরেট স্যালারি প্রদান, মার্চেন্ট পেমেন্ট, চুক্তিবদ্ধ স্কুল-কলেজের ফি প্রদান করা যায় এমক্যাশে। এমক্যাশ এজেন্ট, ইসলামী ব্যাংকের এটিএম/সিআরএম, এজেন্ট আউটলেট ও শাখা থেকে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করা যায়।
সারাদেশে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের দেড় হাজার এটিএম ও ৪০০-এর বেশি সিআরএমের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। সিআরএম মেশিনে উত্তোলনের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক নগদ টাকা জমা করা যায়। ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বা সিআরএম মেশিন থেকে এছাড়াও যেকোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তাৎক্ষণিক ফান্ড ট্রান্সফার, কার্ড ছাড়াই নগদ গ্রহণ ও খিদমাহ কার্ডের বিল প্রদান করা যায়।
ইসলামী ব্যাংকের সর্বশেষ সংযোজন হোয়াটস অ্যাপ সেবা পাওয়া যায় +৮৮০১৩১৩০১৬২৫৯ নম্বরে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে। গ্রাহকের হিসাবে প্রদত্ত যোগাযোগ নম্বর থেকে উক্ত নম্বরে টেক্সট করে অ্যাকাউন্ট ও কার্ডের ব্যালেন্স, মিনি স্টেটমেন্ট, ইসলামী ব্যাংকের প্রতিনিধির সঙ্গে বার্তালাপ (চ্যাটিং), ব্যাংকিং সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্নোত্তরসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ফেসবুক মেসেঞ্জার সাইটেও চ্যাটবটের মাধ্যমে এই সেবাগুলো পাওয়া যাবে।
আধুনিক জীবনযাত্রার ধারণা নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের আছে খিদমাহ নামে শরিয়াহসম্মত ক্রেডিট কার্ড। দেশ-বিদেশে পিওএস মেশিনে বিল পরিশোধযোগ্য কেনাকাটা, হোটেল ও হাসপাতালের বিল পরিশোধ, বাস/ট্রেন/প্লেনের টিকেট কাটায় খিদমাহ কার্ড ব্যবহারযোগ্য। খিদমাহ কার্ডে কেনাকাটায় রয়েছে ইএমআই সুবিধা।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
প্রত্যেক শাখা, এজেন্ট আউটলেট ও প্রায় ৩ হাজার ৩০০ মার্চেন্ট পয়েন্টে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের পিওএস টার্মিনাল। ভিসা বা মাস্টারকার্ড সংযুক্ত যেকোনো ব্যাংকের কার্ড এতে লেনদেনযোগ্য। এছাড়া ব্রাঞ্চ পিওএস থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করা যায়।
ভ্রমণে বিদেশি মুদ্রার ঝক্কি এড়াতে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের ট্রাভেল কার্ড। এতে রয়েছে ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত লেনদেন সুবিধা। বিশ্বের যেকোনো স্থানে নগদ উত্তোলন ও কেনাকাটায় এটা ব্যবহারযোগ্য। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই ট্রাভেল কার্ড সেবা নেয়া যায়। ব্যাংকের যেকোনো শাখা বা অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে কার্ডে ব্যালেন্স লোড করা যায়।
স্বচ্ছন্দে হজ পালনের সুবিধা নিয়ে এসেছে ইসলামী ব্যাংকের হজ প্রিপেইড কার্ড। এতে রয়েছে সৌদি আরবে এটিএম থেকে রিয়াল উত্তোলন ও লেনদেনে বিল পরিশোধের সুবিধা। হজ ও উমরাহ পালনের ক্ষেত্রে এই কার্ড ব্যবহার করা যায়। হজ এজেন্সিও এই কার্ডের সেবা গ্রহণ করতে পারে।
গ্রাহকদের জন্য ২৪ ঘণ্টা তথ্য ও সরাসরি সহায়তা নিয়ে আছে ইসলামী ব্যাংকের কন্টাক্ট সেন্টার। ১৬২৫৯ এবং +৮৮০২৮৩৩১০৯০ এই দুটি নম্বরে রয়েছে কন্টাক্ট সেন্টারের সেবা। ব্যালেন্স অনুসন্ধান, বিভিন্ন ব্যাংকিং তথ্য, কার্ড বন্ধ ও পুনরায় সচল করা, সেলফিন অ্যাকাউন্ট সচল করা, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও কার্ডের গ্রিন পিন সেট করতে সহায়তা, স্টপ পেমেন্ট, চেক বইয়ের চাহিদা প্রদান, স্ট্যান্ডিং ইন্সট্রাকশন, ই-কমার্স লেনদেনসহ যাবতীয় সহায়তা পাওয়া যায় কন্টাক্ট সেন্টারে।
ইসলামী ব্যাংকের রেজিস্টার্ড হিসাবগ্রাহকদের জন্য রয়েছে এসএমএস সার্ভিস। গ্রামীণফোন গ্রাহকরা ২৬৯৬৯ এবং অন্য অপারেটরের গ্রাহকরা ৬৯৬৯ নম্বরে নির্ধারিত ফরম্যাটে এসএমএস পাঠিয়ে ব্যালেন্স, মিনি স্টেটমেন্ট, ট্রানজেকশন নোটিফিকেশন ও ব্যাংকিং তথ্যসহ বিভিন্ন পুশ-পুল এসএমএস পেতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংকের এ রকম অনেক সেবার ফলে জীবন এখন আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্য হয়েছে। গতি পেয়েছে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে। এগিয়ে চলেছে দেশের অর্থনীতি।
বাংলাদেশে যে ইসলামী ব্যাংক রয়েছে:
ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক। এর মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করেছে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক নাম পরিবর্তন করে আজ থেকে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক করা হয়েছে।
নতুন বছরের শুরু থেকে পূর্ণাঙ্গ শরীয়াহভিত্তিক ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করছে ব্যাংকটি।
পাশাপাশি ইসলামি ধারার সেবার জন্য প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ৮০টির মতো শাখা ও উইন্ডো রয়েছে।