নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে চিকিৎসাসেবায় পিছিয়ে মানসিক রোগীরা: গবেষণা

মানসিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্তদের চিকিৎসা না নেওয়ার পেছনে দায়ী সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। এ ছাড়া সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন বা স্টিগমার দুষ্টচক্রের প্রভাবের পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিটের আটজন গবেষকের করা এক গবেষণা জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট, এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশন ও ডিজ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক সেমিনারে তথ্য প্রকাশ করা হয়।

নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে চিকিৎসাসেবায় পিছিয়ে মানসিক রোগীরা: গবেষণা

 

এ সময় জানানো হয় মানসিক রোগের ক্ষেত্রে মানুষ কেন চিকিৎসা গ্রহণ করতে চায় না— এ প্রশ্নে যে তথ্যগুলো পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে— মানসিক অসুস্থ ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক মূল্যায়ন, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়, চিকিৎসক ও চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতা, ব্যয়বহুলতা, ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস, লিঙ্গভিত্তিক সমস্যা ইত্যাদি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট ‘কমিউনিটিভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রকল্পের পক্ষে এ গবেষণা পরিচালনা করে। এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রকল্প এতে অর্থায়ন করে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং সিলেটসহ আট বিভাগে গবেষণা করা হয়। দেশের কিশোর-কিশোরী ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা ছিলেন— যাদের মানসিক সমস্যা আছে, যাদের মানসিক সমস্যা নেই, স্বাস্থ্য পেশাজীবী এবং সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে চিকিৎসাসেবায় পিছিয়ে মানসিক রোগীরা: গবেষণা

যাদের মানসিক সমস্যা নেই— এই নমুনা শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন, পরিবারের লোকজন এবং সমাজের মানুষ। স্বাস্থ্য পেশাজীবী এবং সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া এই নমুনা শ্রেণিতে ছিল মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী (যেমন, সাইকিয়াট্রিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিক নার্স) এবং অন্য বিভাগের স্বাস্থ্য পেশাজীবী (যেমন সাধারণ চিকিৎসক, নার্স, কবিরাজ, পল্লী চিকিৎসক ইত্যাদি)। গবেষণায় দলভিত্তিক জরিপে বিভিন্ন পেশার ১৯৩ জন এবং ২৩ পেশাজীবী ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

 

এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক এডিডি ইন্টারন্যাশনালের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মিজ ম্যারি এ্যান ক্লেমেন্টস। গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন গবেষণাকর্মের মূল গবেষক মালয়েশিয়ার পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা মনেবিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি গবেষক প্রদ্যুৎ রায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

তিনজন বিশেষজ্ঞ আলোচক উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। মানসিক রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিতে অনুষ্ঠানে বক্তারা বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো— জেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবাদানে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের আদলে সেবাপ্রতিষ্ঠান চালু করা।

মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় দেশব্যাপী ক্যাম্পেইন কর্মসূচির জন্য সরকারি সহযোগিতা। মানসিক স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে সব প্রতিবেদন, প্রয়োজনীয় তথ্যসামগ্রী ব্রেইলে প্রকাশ করা। শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা। মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া ইত্যাদি।

নেতিবাচক নেতিবাচক  নেতিবাচক 

জাতিসংঘে পদ্মা সেতুর ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর

কুনিও হত্যায় জেএমবির ৪ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল, খালাস ১

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.