সেনা অভ্যুত্থানে বুরকিনা ফাসোর সামরিক সরকারের প্রধান ক্ষমতাচ্যুত
বুরকিনা ফাসোর সামরিক সরকারের প্রধান পল হেনরি দামিবাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ত্রাওরে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। খবর আলজাজিরার।
তিনি বলেন, ‘দামিবাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সরকার ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে।’
সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন ইব্রাহিম ত্রাওরে নিজে। তিনি বলেন, ‘দেশে ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র বিদ্রোহ মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছেন দামিবা। তাই তাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয় এ বছরে এটি দ্বিতীয় সেনা অভ্যুত্থান। আট মাস আগে এ বছরের জানুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট রচ কাবোরকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন পল হেনরি দামিবা। আজ আবার সেনা অভ্যুত্থানে দামিবাকে ক্ষমতাচ্যুত করলেন ইব্রাহিম ত্রাওরে।
আল কায়েদা এবং আইএসআইএসের সঙ্গে জড়িত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে লড়াই করছে। আলজাজিরার প্রতিনিধি নিকোলাস হক সেনেগালের ডাকার থেকে বলেছেন, বুরকিনা ফাসোর ৪০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশটিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষের কারণে নিরাপত্তা নিয়ে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে। সর্বশেষ অভ্যুত্থানের নেতারাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সশস্ত্র দলগুলোকে মোকাবিলা করার। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে কেউ-ই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেননি।
ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) এ অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা করে বলেছে, বড্ড অসময়ে অভ্যুত্থানটি ঘটল। দেশটি একটু একটু করে সাংবিধানিক শৃঙ্খলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সে যাত্রা আবার বাধাগ্রস্ত হলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট এক বিবৃতিতে ইকোওয়াস আরও বলেছে, কোনো ধরনের অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করাকে সমর্থন করে না ইকোওয়াস।
এদিকে অভ্যুত্থানের পর পরই ইব্রাহিম ত্রাওরে সীমান্তগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন এবং সব রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে তিনি শুক্রবার রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেন।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ‘বুরকিনা ফাসোতে শান্তি দরকার, স্থিতিশীলতা দরকার এবং দেশের কিছু অংশে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ঐক্য দরকার।’